চুক্তির দেড় মাস পরও জবিতে চালু হয়নি 'নগদ সেবা'

  জবি সংবাদদাতা   বুধবার | জুন ১৬, ২০২১ | ০১:৪৫ এএম

বেতন, ভর্তি ও পরীক্ষার ফিসহ অন্যান্য ফি জমা দেওয়ার জন্য ডাকবিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের সাথে চুক্তির দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনোও সেই সেবার সুবিধা নিতে পারছেন না জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। যার ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।

জানা যায়, এ বছরের ১লা এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতন, ভর্তি ও পরীক্ষার ফিসহ অন্যান্য ফি প্রদানের সুবিধার্তে ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের সাথে চুক্তি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চুক্তির দেড়মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও নগদের বিল পেমেন্ট অপশনে যুক্ত হয়নি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। যার ফলে ভোগান্তিসহ নানা জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে,  ২০১৭ সালের শেষের দিকে ভর্তি ও পরীক্ষার ফিসহ সকল ফি পরিশোধের জন্য রূপালি ব্যাংকের অনলাইন ব্যাংকিং সেবা শিওরক্যাশের মাধ্যমে টাকা জমা দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঢাকার বাইরে অবস্থান করায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিওরক্যাশ এজেন্ট না পাওয়া যাওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থীই বেতন ও ফি পরিশোধে ভোগান্তিসহ নানা জটিলতার অভিযোগ করছেন।

এদিকে ১০ আগস্ট থেকে সশরীরে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৯ জুনের মধ্যে অনলাইনে পরের সেমিস্টারের ভর্তি ও পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই অনেক বিভাগ পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার নোটিশ দিয়েছে।

নগদের সাথে চুক্তি হওয়ার পরও সেবা কার্যক্রম চালু না হয় শিওরক্যাশ ছাড়া বিকল্প কোনো উপায়ও নেই তাদের।

লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম বলেন, আমার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলায়। আমার এখানে বিকাশ রকেট ছাড়া অন্য কোনো সেবাই পাচ্ছিনা।

সমাজকর্ম বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, মহামারির পর থেকেই আমি গ্রামে আছি। পুরো উপজেলায় ঘুরেও সিওরক্যাশ এজেন্ট না পাওয়ায় সেমিস্টার ফি দিতে আমাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। পরে ঢাকায় আমার এক বন্ধুকে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে তার মাধ্যমে সেমিস্টার ফি দিয়েছি।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিমি বলেন, আমার অনেক বন্ধুর এলাকায় সিওরক্যাশ এজেন্ট না থাকায় আমি তাদের সেমিস্টার ফি পরিশোধ করতে সহযোগিতা করেছি। (তারা আমাকে রকেটে ও বিকাশে টাকা পাঠিয়েছিল, সে টাকা ক্যাশ আউট করে সিউরক্যাশের মাধ্যমে বিভাগীয় বিল পরিশোধ করেছি।) এখন আবার অনলাইনে পরীক্ষার ফি পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে। তারা আবারও ঝামেলায় পড়বে।

দর্শন বিভাগের  শিক্ষার্থী পায়েল বলেন, নগদে ফি জমা দেওয়ার অপশন খুঁজে পাচ্ছিনা। আমার বাড়ি শিওরক্যাশ এজেন্ট এর দোকান অনেক দূরে। এর আগেও সেমিস্টার ফি জমা দিতে অনেক ঝামেলায় পড়েচ্ছিলাম।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেটওয়ার্ক অ্যান্ড আইটি দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য দৈনিক জাগো প্রতিদিনকে বলেন, নগদের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে। নগদের ওখানে একটু সমস্যা আছে। দুয়েকদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। যেহেতু এখনও পরীক্ষার ফি পরিশোধের সময় আছে, কয়েকদিন পর যেন শিক্ষার্থীরা ফি পরিশোধ করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান বলেন, আমি আসলে  নগদের বিষয়ে অবগত ছিলাম না। আমি কথা বলে আগামীকাল জানাবো।

শিওরক্যাশের মাধ্যমে ফি দেওয়া যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা আছে সবগুলো মাধ্যম ওপেন রাখার। যাতে শিক্ষার্থীরা সহজেই ফি পরিশোধ করতে পারে।

এ বিষয়ে কথা বলতে  বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।