দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিবেশও দূষিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এখন রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছে সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক উপাদান।
আজ শনিবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ'র দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার: বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির এক ওয়েবিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “সহিংসতা এবং সাম্প্রদায়িক উপাদান যুক্ত হলে রাজনৈতিক পরিবেশও বিষাক্ত হয়ে যায়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আর রাজনৈতিক পরিবেশে যদি স্থিতি না থাকে, স্ট্যাবিলিটি না থাকে, তা হলে এসব বিষয়ে ইকোসিস্টেম পূনরুদ্ধারেও আমরা বিজ্ঞানসম্মতভাবে যথাযত উদ্যোগ নেওয়া এবং তার বাস্তবায়ন সম্ভব করতে পারি না।”
এ সময় পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “পরিবেশ আসলে প্রাণের ধারক, জীবন শক্তির বাহক। সৃষ্টির শুরু থেকে পরিবেশের সঙ্গে প্রাণির মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতার ওপর তার অস্তিত্ব নির্ভর করে আসছে। পরিবেশ প্রতিকূল হলে জীবের ধংস বিনাশ অবসম্ভ্যাবি।“
বাস্তুতন্ত্র বিনষ্ট হওয়ার কারণ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত ভারসাম্যহীন বাস্তুসংস্থান মানব সভ্যতার অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। একটি বাস্তুতন্ত্রের ছোট পরিবর্তন যেমন একটি প্রজাতির বিলুপ্তি বা প্রবর্তন বাস্তুসংস্থানে পরিবর্তন আনতে পারে। জনসংখার আধিক্য নগরায়ন শিল্পের বিকাশ দূষণের কারণে আমাদের বাস্তুসংস্থান প্রতিনিয়ত ব্যহত হচ্ছে।
“বাস্তুসংস্থান পুনরুদ্ধারে যারা অংশীদার তাদের মধ্যে প্রায়স স্ববিরোধী ইচ্ছার প্রতিফলন দেখা যায়। ভূমির অপরিকল্পিত ব্যবহার, কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের প্রয়োগ, গবাদি পশুতে অতিরিক্ত ওষুধের ব্যবহার ইকোসিস্টেমের মারাত্বক ক্ষতি সাধন করছে।”
পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, “পরিবেশ সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধারে তিনি নিজেই খোঁজখবর রাখছেন।
“স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে সম্পৃক্ত করে ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণের পদক্ষেপ অনেক আগেই নেয়া হয়েছে।”
ওয়েবিনারে পরিবেশ বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আশরাফ দেওয়ান। এছাড়াও ওয়েবিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক আনুন নিশাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ উপাচার্য অধ্যাপক নাসরিন আহমেদ, স্থপতি ইকবাল হাবিব ও সাংবাদিক প্রণব সাহা।
সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক বজলুল হক খন্দকার বলেন, “আজকে আমরা বলছি ২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ব্যবসাবান্ধব হয়েছে। কিন্তু আমরা এই বাজেটকে পরিবেশবান্ধব বাজেট বলছি না। বাজেট পরিবেশবান্ধব হওয়াও জরুরি।”
ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন। তিনি এই বর্ষায় সবাইকে অন্তত একটি হলেও গাছ লাগানোর আহ্বান জানান।
দলীয় কার্যালয়ের ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ- কমিটির সদস্য শাহজাহান শিশির, মিজানুর রহমান লিটন, আনিসুর রহমান লিটু, আতিকুল ইসলাম শিমুল, মুন্সি সেলিম, মাকসুদ আলম ডাবলু, আমিনুল ইসলাম আমীন, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতিকুর রহমান শাজাহান, হাবিবুর রহমান পাপ্পু, মাহবুব আলী, শহীদুল্লাহ মুহাম্মদ শাহ নূর, উৎপল সাহা, সুজন মন্ডল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, তাসলিমা বেগম, আবু হানিফ, মেহেদী হাসান রনি, আল মাহমুদ সরকার তারেক প্রমুখ।
এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শাহবাগের গণগ্রন্থাগার বাগানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে বৃক্ষরোপন করেন উপকমিটির নেতারা।