রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর সংখ্যা। এ রোগে কারও মৃত্যুর ঝুঁকি নেই; সংশ্লিষ্টরা এমন কথা বললেও এ বছর ইতোমধ্যেই এর শিকার হয়ে ৯ জন মারা গেছেন। এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন বেশকিছু রোগী। এই অবস্থার পরিবর্তনে দ্রুত মশা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সচেতনতার ওপর জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানাগেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই আগস্ট মাসে এক হাজার ৫৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত জুলাই মাস থেকে এ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মোট দুই হাজার ২৭১ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
মারা যাওয়া নয়জনের মধ্যে পাঁচজন নারী, একজন পুরুষ ও তিনজন শিশু রয়েছে। গত ৯ জুন রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৩৪ বছরের এক নারী মারা যান। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ২৪ জুন ৩১ বছর বয়সী এক নারী মারা গেছেন। বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজে ৩০ জুন ২৬ বছরের এক নারী, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ১৫ জুলাই এক বছর সাত মাস বয়সী এক শিশু, ৮ জুলাই ঢাকা শিশু হাসপাতালে একজন, ১৬ জুলাই একই হাসপাতালে ৯ বছরের এক শিশু, বারডেম হাসপাতালে ২৬ জুলাই ২৭ বছরের একজন, পপুলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৮ আগস্ট ৫৫ বছরের এক নারী এবং একই দিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫৪ বছরের এক নারী মারা গেছেন।
কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, গত ১ জানুয়ারি থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হন ৭০৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
বর্ষা মৌসুমে মশার প্রকোপ বেশি হয় উল্লেখ করে এর আগে গত মে মাসে রাজধানীর ১৯টি এলাকাকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া বিস্তারে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এরপর সিটি কর্পোরেশন মশার লার্ভা নির্মূলে বেশকিছু অভিযান চালায়।
ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এডিস মশাবাহিত রোগের প্রতিরোধ ও বৃদ্ধি রোধে সরকারিভাবে জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে নগরবাসীকে দিনে ও রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টাঙানোর পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি মশা নিয়ন্ত্রণে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে নজর দিতে গুরুত্বারোপ করেন।